আমি যদি দেখি ফেসবুক আমার রাষ্ট্রকে বিপন্ন করে ফেলেছে, তাহলে আমার রাষ্ট্র বাঁচাবো না ফেসবুক বাঁচাবো? আমাকে অবশ্যই রাষ্ট্র বাঁচাতে হবে এবং তার জন্য যা করার তা আমাকে করতেই হবে।
ভবিষ্যতে ফের ফেসবুক-ইন্টারনেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কী না- এমন প্রশ্নের উত্তরে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেছেন।
আগামী নির্বাচনের সময় বা কোনো ঘটনা ঘটলে আবারও ইন্টারনেট বন্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে মন্ত্রী বলেন, সবার আগে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা এবং অন্য বিষয়গুলো অস্বীকার করার উপায় নেই।
আবার যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কিংবা জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে- তখন প্রযুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকা- এটা কোনো অবস্থাতেই নয়। আমাকে বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতর সেক্রিফাইস করতেই হবে।
সোমবার রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে ‘আইটিইউ-বিটিআরসি এশিয়া-প্যাসিফিক রেগুলেটরস রাউন্ডটেবিল’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ফেসবুকে আমাদের ফিল্টারিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই।
আমরা কেবল ফেসবুককে অনুরোধ করতে পারি। ফেসবুক তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কাজগুলো করে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, এতোদিন আমাদের ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না, এখন ফেসবুকের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। ফেসবুক আমাদের সব কথা শোনে না, কিন্তু কিছু কথা শোনে।
তবে এই ব্যবস্থাটিকে আমরা মনে করি পর্যাপ্ত না। সে কারণে টেলিকম বিভাগের মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রকল্পটি শেষ করতে পারলে সম্পূর্ণভাবে কনটেন্ট ফিল্টারিং বা যাচাই-বাছাই করতে সক্ষম হবো। প্রকল্পটি টেবিলে ছিল, এখন এটি মাঠে আছে।
মন্ত্রী বলেন, আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে পারি- সবার আগে রাষ্ট্র, জনগণের নিরাপত্তা ও অন্য বিষয়গুলো। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
আমার যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কিংবা জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, তখন প্রযুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকা কোনো অবস্থাতেই নয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত শনিবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে ঢাকায় তাণ্ডব চালানো হয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার।
এদিকে আগামী ৮ থেকে ১০ আগস্ট র্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার ১৮তম পলিসি এবং রেগুলেটরি ফোরাম। ওই তিন দিন থাকছে এ অঞ্চলের জন্য উচ্চপর্যায়ের টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংক্রান্ত নীতিমালা, রেগুলেটরি ইস্যু নিয়ে আলোচনা।
এছাড়া ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের জন্য টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি সংক্রান্ত কৌশলপত্র প্রণয়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হবে। ডিজিটাল অর্থনীতিতে উদীয়মান প্রযুক্তির প্রবণতাসহ পলিসি, রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জ ও উদ্ভাবন বিষয়ে আলোকপাত করা হবে অনুষ্ঠানে।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) বিভিন্ন দেশের রেগুলেটর প্রধান, সংস্থা প্রধান, অপারেটর, টেলিকম ও আইসিটি এক্সপার্টসহ প্রায় ১৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নেবেন এতে।
আইটিইউ ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার (এপিটি) উদ্যোগে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসির যৌথ আয়োজনে হচ্ছে টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের পাঁচ দিনের এই দুটি সম্মেলন।